

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেল সড়কে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দূর্ঘনায় পতিত সিএনজি অটো রিক্সার শিশু ও নারী যাত্রী এবং সিএনজি চালকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী শিশু চারজন একই পরিবারের বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেকপাড়ার জাফর আলমের মেয়ে আসমাউল হোসনা (২৭), তার দুই ছেলে আতা উল্লাহ (১) ও আশেক উল্লাহ (৩), নিহত আসমাউল হোসনার বোন রেনু আক্তার (১৩) এবং ঈদগাঁও উপজেলার মেহের ঘোনার এলাকার ছৈয়দ নূরের ছেলে সিএনজি চালক হাবিব উল্লাহ।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়া রেলক্রসিং পারাপার স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৈয়বুর রহমান।
এদিকে বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা প্রবাল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাস্থল রশিদনগরে পৌঁছালে স্থানীয় জনতা ট্রেনটি আটকে দেয়। তারা মরদেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন ছেড়ে না দেওয়ার ঘোষণা দেন। ঘটনাস্থলে উত্তেজিত জনতার সাথে কথা বলে, পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালান, রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৈয়বুর রহমান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা। ২ ঘন্টা পর বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে ট্রেনটি ছেড়ে দেয় জনতা।
নিহত দুই মেয়ের বাবা জাফর আলম জানান, তাঁর দুই মেয়ে ও দুই নাতিসহ বাপের বাড়ি থেকে রামুর কালিরছড়া আসমাউলের শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিল। এ সময় তাদের সিএনজি অটোরিক্সাটি ধলিরছড়া রেলক্রসিং পারাপারের সময়ে আকষ্মিক চট্টগ্রাম মুখি একটি ট্রেন, তাদের অটোরিক্সাকে মুখোমুখি ধাক্কা দেয়। চলন্ত ট্রেনের সামনে আটকেপড়া দুমড়ে মুচড়ে পড়া অটোরিক্সাটিকে এক-দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার দুই মেয়ে ও দুই নাতি সহ সিএনজি অটোরিক্সা চালক নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে কক্সবাজার থেকে একটি ট্রেন চট্টগ্রামের দিকে ছেড়ে যাচ্ছিল। এসময় ক্রসিং দিয়ে রেলপথ পার হচ্ছিল একটি যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিক্সা। চলন্ত ট্রেনটি অটোরিক্সাকে সরাসরি ধাক্কা দিলে, অটোরিকশাটি ট্রেনের সাথে আটকে পড়ে। অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যাত্রীরা পিষ্ট হয়ে যায়। এতে তাদের শরীরের অংশ ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে রেললাইনের ছড়িয়ে পড়ে। অবিলম্বে ট্রেন পারাপার স্থানে রেল গেইট স্থাপন সহ স্থায়ী ভাবে গেইটম্যান নিয়োগ দেয়ার দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।
রামু উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল জানিয়েছেন- মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের সবার মরদেহ টুকরো টুকরো হওয়ায় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিলো না। এরপরও টুকরো টুকরো অংশগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষুব্দ জনতার আটকে দেয়া ট্রেনটি বিকালে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত